মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২

এনরিকো ফার্মি - জীবন ও কর্ম - Enrico Fermi – Life and Works


এনরিকো ফার্মি - জীবন ও কর্ম - Enrico Fermi – Life and Works
এনরিকো ফার্মি - জীবন কর্ম - Enrico Fermi – Life and Works

এনরিকো ফার্মি - জীবন কর্ম - Enrico Fermi – Life and Works

বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যেও এনরিকো ফার্মি তুলনাহীন। তিনিই বোধ হয় শেষ পদার্থবিজ্ঞানী, যার পরীক্ষণ এবং তত্ত্ব উভয় ক্ষেত্রেই দক্ষতা ছিল অসাধারণ। একদিকে তিনি যেমন বিটা-ভঙ্গন প্রক্রিয়ার সঠিক তত্ত্বটি দিয়েছিলেন, তেমনি অন্যদিকে তিনি পারমাণবিক চুল্লি তৈরি করেছিলেন। পদার্থবিজ্ঞানের প্রায় সবকিছুই তার জানা ছিল এবং সবকিছুই তিনি তাঁর গবেষণায় ব্যবহার করতে পারতেন। ১৯২৪ সালে আইনস্টাইন (Albert Einstein) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এস, এন, বসুর (Satyendra Nath Bose) কাছ থেকে একটি পাণ্ডুলিপি পান, যেখানে প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম শক্তিবণ্টন এক সম্পূর্ণ নতুন ভিত্তিতে গণনা করা হয়েছিল। বসু আলোর কণা প্রকৃতিকে আক্ষরিক অর্থে নিয়েছিলেন এবং বোলৎসমান পরিসংখ্যান (Maxwell–Boltzmann statistics) ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কণার সবচেয়ে সম্ভাব্য অবস্থা গণনা করেছিলেন। তাঁর গণনার মূল কথা ছিল এই যে, কোয়ান্টামগুলি সম্পূর্ণরূপেসদৃশ বা একই আইনস্টাইন তাঁর গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে বসুর কাজের এই মর্ম তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারেন এবং পর পর দুটি প্রবন্ধে এই নতুন পরিসংখ্যানের আরও কিছু তাৎপর্য তুলে ধরেন। প্রথমত তিনি বসুর পদ্ধতি আদর্শ গ্যাসের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলেন, যার ফলে দেখা গেল যে, অতি অল্প তাপমাত্রায় গ্যাস এখন জমাট বেঁধে থাকবে (বসু-আইনস্টাইন জমাটকরণ - Bose–Einstein condensate (BEC)) দ্বিতীয়ত আইনস্টাইন মন্তব্য করলেন যে, বসুর কাজের ফলে বিকিরণের তরঙ্গ এবং কণা প্রকৃতি এখন পরিপূরক ভিত্তিতে দেখা উচিত। এই প্রসঙ্গেই তিনি লুই দ্য ব্রগলির গবেষণা প্রবন্ধের দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন যে, ওই কাজ থেকে ভারি বস্তুকণার সঠিক তরঙ্গ-বর্ণনা হয়তো পাওয়া যাবে। 

বসুর কাজের আরো একটি দিক ছিল, যা আবিষ্কার করেছিলেন এনরিকো ফার্মি (Enrico Fermi)

সময়েই ওলগ্যাংগ পাউলি (Wolfgang Ernst Pauli) তাঁর বিখ্যাত বর্জননীতি (Pauli exclusion principle) আবিষ্কার করেন। এই নীতির মূল কথা হলো এই যে, দুটো ইলেকট্রনের সব কোয়ান্টাম সংখ্যা কখনও এক হতে পারে না। একটি ইলেকট্রনের অবস্থা নির্দেশ করতে চারটি কোয়ান্টাম সংখ্যার প্রয়োজন হয়। এর তিনটি এক হয়ে গেলেও চতুর্থটি অবশ্যই আলাদা হতে হবে। এটাই পাউলির বর্জননীতি। 

ঠিক এই পর্যায়েই এনরিকো ফার্মি মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিজ্ঞানের রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে, পাউলির বর্জননীতির ফলে বসুর গণনা পদ্ধতি ইলেকট্রনের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব নয়। কেননা বসুর গণনাপদ্ধতিতে দশাস্থানের ক্ষুদ্রতম অংশে যে কোনো সংখ্যার আলোককণা থাকতে পারে। কিন্তু বর্জননীতি অনুসারে হয় ইলেকট্রন থাকবে অথবা থাকবে ! এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে ফার্মি একটি বিকল্প পরিসংখ্যান পেলেন, যা দিয়ে আদর্শ গ্যাসের কোয়ান্টাম আচরণ ব্যাখ্যা করা যায়। এটাকেই এখন বলে ফার্মি-ডিরাক পরিসংখ্যান (Fermi-Dirac statistics) যেসব বস্তুকণা ফার্মি-ডিরাক পরিসংখ্যান মেনে চলে তাদের বলে ফার্মিয়ন (fermion - যেমনইলেকট্রন, প্রোটন ইত্যাদি) এবং যেগুলি বসু আইনস্টাইন পরিসংখ্যা মেনে চলে তাদের বলে বোসন (boson - যেমনআলোককণা বা ফেটন, পাইসেসন বা পায়ন ইত্যাদি) কিছুদিনের মধ্যেই ডিরাক এবং হাইজেনবার্গ পৃথকভাবে প্রমাণ করেন যে, কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে শুধু দুটোই সম্ভব। কেননা, তরঙ্গ-অপেক্ষক প্রতিসাম্যের হলে তা হবে বোসনকণার তরঙ্গ অপেক্ষক এবং বিপরীত প্রতিসাম্যের হলে তা হবে ফার্মিয়ন কণার। 

ফার্মি-পরিসংখ্যানের অসংখ্য ব্যবহারের মধ্যে ফার্মি নিজে জড়িত ছিলেন শুধু পরমাণুর ফার্মি-থমাস নকশার (Thomas–Fermi (TF) model) সঙ্গে। এই নকশার মূল ধারণা হলো এই যে, পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বহিঃস্থ ইলেকট্রনগুলিকে একটা মেঘ হিসেবে কল্পনা করা যায়। এই মেঘের বিভিন্ন বিন্দুতে বিভব খুব বেশি আলাদা নাও হতে পারে এবং বর্জননীতির জন্য এই মেঘ চুপসেও যাবে না। এই নকশা দিয়ে পরমাণুর কোনো কোনো গুণ ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন -পাউলি এই নকশা ব্যবহার করে ধাতুর প্যারা-চৌম্বকত্বের তাপের ওপর নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা করেছিলেন।  

এর পরেই ফার্মির দৃষ্টি বিটা-ভঙ্গন (beta decay) তেজস্ক্রিয়ার দিকে আকৃষ্ট হলো। একটি নিউট্রন ভেঙে প্রোটন, ইলেকট্রন আর অ্যান্ট্রি-নিউট্রিনো পাওয়া যায়। নির্গত ইলেকট্রনকে বলে বিটা-রশ্মি এবং বিটা-ভঙ্গন প্রক্রিয়ার জন্য ফার্মি ১৯৩২ সালে যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন তা আজও মোটামুটি অক্ষুন্ন রয়েছে। হ্যান্স বেথে যথার্থই বলেছেন, “১৯৩২ সালের রিভিয়্যু অব মর্ডান ফিজিক্সে ফার্মির আশ্চর্য সুন্দর প্রবন্ধ থেকেই আমার মতো আপনারাও সম্ভবত প্রথম ক্ষেত্রতত্ত্ব (quantum field theory (QFT)) শিখেছিলেন। একটি কঠিন বিষয়কে সহজ করার এটা এমন এক দৃষ্টান্ত, যা আমার মনে হয় অতিক্রম করা যায় না। 

এই বিটা-ভঙ্গন তত্ত্বে এনরিকো ফার্মি তার স্বভাবসিদ্ধ সরাসরি পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রকৃতির একটি জটিল প্রতিভাসের মূল কথাটির দিকে অঙুলি নির্দেশ করলেন। ফার্মি যখন তার তত্ত্ব সৃষ্টি করেন তখন পরীক্ষণলব্ধ ফল খুব বেশি ছিল না। শুধু প্রাকৃতিক বিটা নিঃসরণী নিউক্লিয়াসগুলিই তখন জানা ছিল। পজিট্রন-ভঙ্গন তখন জানা ছিল না। কিন্তু তবু ফার্মির তত্ত্বে প্রতিভাসের নিখুঁত বর্ণনা ছিল, যার আধুনিকতম রূপ হলো গ্রাসহাউ-সালাম-ভাইনবার্গ তত্ত্ব (GLASHOW-WEINBERG-SALAM THEORY OF ELECTROWEAK INTERACTIONS AND THE NEUTRAL CURRENTS) ফার্মির তত্ত্বে ইলেকট্রন আত্মসাতের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল। সিলেকশন রুলও ছিল এবং এসব কিছুই পরবর্তীকালে সুপ্রমাণিত হয়েছে।

বিটা-ভঙ্গনের ওপর লেখা প্রবন্ধটিই তাত্ত্বিক গবেষক হিসেবে লেখা ফার্মির - বোধহয় শেষ প্রবন্ধ। ১৯৩০ সালের দিকেই নিউক্লিয়াস পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, নিউক্লিয়াস তত্ত্বে আর কোনো অগ্রগতি সম্ভব নয় নতুন পরীক্ষণলব্ধ উপাত্ত ছাড়া। ফার্মিও তাই যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, অপরের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই পরীক্ষণের কাজে নেমে পড়া শ্রেয়। সময়েই রোম বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্টি হয় বিখ্যাত নিউক্লিয়াস পদার্থবিজ্ঞানীদের দল যাদের মধ্যে ছিলেন ফার্মি, সেগ্রি, আমাল্ডি, রসেটি, পন্টিকার্ভো, ডাগষ্টিনো এবং আরও অনেকে। দলনেতা ফার্মি ঠিক করলেন যে, নিউট্রন দিয়ে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার ওপর গবেষণা করাই হবে সবচেয়ে ভালো।

১৯৩৩ সালে প্যারিসে জোলিও কুরি (Jean Frédéric Joliot-Curie) এবং আইরিন কুরি (Irène Joliot-Curie) এই কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। বোরোন, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়ামকে আলফা-কণা দিয়ে আঘাত করে তারা নতুন আইসোটোপ সৃষ্টি করেন, যার পজিট্রন-কণা নিঃসরণ করার পরে ভেঙে যায়। এই পরীক্ষণের প্রকাশিত বর্ণনা পড়ে ফার্মি সিদ্ধান্ত নিলেন যে, নিউট্রন দিয়ে একই কাজ আরও ভালোভাবে করা যাবে। কেননা, আধানহীন নিউট্রন সহজেই বস্তুর মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে।

রোমের একজন অধ্যাপকের কাছে এক গ্রাম রেডিয়াম ছিল এবং রেডন বেরিলিয়ামের উৎস তৈরি করার একটি যন্ত্রও ছিল। ফার্মি নিজের হাতেই একটি গাইগার মুলার কাউন্টার (Geiger–Müller counter) তৈরি করে ফেললেন, যা দেখতে খুব সুন্দর হলো না, কিন্তু কাজ করত ভালোই। এভাবেই তিনি বিভিন্ন পরমাণুর ওপরে নিউট্রন-কণা ফেলে পরীক্ষা শুরু করলেন। হাইড্রোজেন, লিথিয়াম, বেরিলিয়াম, বোরোন, কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন কোথাও কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা দেখা গেল না। কিন্তু ফার্মি হাল ছাড়ার পাত্র নন। অবশেষে ফ্লোরিনে এসে তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া গেল। দিনটি ছিল ১৯৩৪ সালের ২৫ মার্চ। ৬৩টি পদার্থের মধ্য ফার্মি ৩৭টির কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা প্রমাণ করলেন, যার মধ্যে ছিল থোরিয়াম এবং ইউরেনিয়াম। নিউট্রন দিয়ে আঘাত করার পর এই দুটি থেকে যে নতুন বস্তু তৈরি হয় সেগুলি থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয়। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, ক্রমাগত প্রোটনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নিউট্রন যদি মন্থরগতি হয়ে যায় তবে ধরনের নিউট্রন দিয়ে পারমাণবিক রূপান্তর ঘটানো অপেক্ষাকৃত সহজ। ইউরেনিয়ামের কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তার কোনো কোনো ফল ফার্মি বুঝতে পারলেন না। ১৯৩৮ সালে এই সমস্যারই সমাধান করেছিলেন বার্লিনে হান (Otto Hahn) এবং স্ট্রাসমান (Friedrich Wilhelm Strassmann), যখন তারা নিউক্লিয়াসের বিভাজন (Nuclear fission) প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন।

কিন্তু ১৯৩৪ সালের পর থেকেই ইউরোপের রাজনৈতিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। ইতালি নাৎসি জার্মানির প্রভুত্ব-বলয়ের মধ্যে চলে আসে। ১৯৩৮ সালে ফার্মি নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য সুইডেন যান। কিন্তু ফেরার পথে জাহাজ বদলিয়ে সোজা নিউইয়র্কে চলে আসেন।

১৯৩৯ সাল থেকে শুরু করে তিন বছর ফার্মি ছিলেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর তাঁকে এবং তাঁর দলকে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাতুবিদ্যা গবেষণাগারে নিয়ে আসা হয়। সময়েই ফার্মির প্রধান কাজ ছিল পারমাণবিক চেইন-রিঅ্যাকশন সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের পর ফার্মির এই বিশেষ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অধ্যায় শেষ হয়ে যায়।

কিন্তু পৃথিবীর সর্বপ্রথম পারমাণবিক চুল্লি তৈরি করার গৌরব নিঃসন্দেহে ফার্মির। তিনিই প্রথম টন ইউরেনিয়াম ঝারির আকারে সাজিয়েছিলেন এবং ক্যাডমিয়ামের নিয়ন্ত্রণ দণ্ডটি ঢুকিয়ে পৃথিবীর প্রথম নিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটিয়েছিলেন। তাত্ত্বিক গণনা থেকে শুরু করে লেদমেশিন দিয়ে মিস্ত্রির কাজ করা কোনো কাজেই তিনি পিছিয়ে থাকতেন না। তাই ১৯৪২ সালের ডিসেম্বর পারমাণবিক চুল্লির সংকট মুহূর্ত যখন উপস্থিত হলো তখন সবচেয়ে শান্ত, সবচেয়ে আত্মস্থ ছিলেন দলনেতা ফার্মি। কারণ তিনি কোনো দুর্ঘটনা ঘটার কোনো সম্ভাবনা দেখছিলেন না।

যুদ্ধের পর পদার্থবিজ্ঞানে নতুন গবেষণার দিকে ফার্মি ধাবিত হলেন। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সময়ে একটি বড় সিনক্রোসাইক্লোট্রোন (synchrocyclotron) তৈরি করা হয়। ফার্মি ঠিক করলেন এই যন্ত্র দিয়ে পাইমেসন (pi meson - Pion) তৈরি করে তিনি তার বিচ্ছুরণ মাপবেন। কাজের জন্য তিনি নিজেই একটি ট্রলি তৈরি করলেন, যা বহুদিন সার্থকভাবে কাজ করেছে। ফার্মি সকলকে এটা গর্বের সঙ্গে দেখাতেন। 

এই পরীক্ষণের সময়ে যা থেকে পাঠ নিয়ে তিনি অবিলম্বে দ্রুত বিচ্ছুরণ প্রস্থচ্ছেদ হিসেব করে ফেলতেন। তারপর মাথা নেড়ে বলতেন যে, প্রস্থচ্ছেদ অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তার সহকর্মী অ্যান্ডারসন বললেন, “এনরিকো, দেখুন, ব্রুকনার নামে একজন তাত্ত্বিক বলছেন যে, ধনাত্মক পাইমেসনের প্রস্থচ্ছেদ ঋণাত্মক পাইমেসনের চাইতে বেশি হবে।

সে এটা কেমন করে জানবে?”

কিন্তু, এনরিকো, এই ব্রুকনার বলছেন যে, প্রস্থচ্ছেদ প্রায় ১২০ মিলিবার্ন হবে।

 আমরা তার অনেক বেশি পাচ্ছি।বললেন ফার্মি।

এভাবেই অনুরণনকণাডেল্টা রেজোনান্স’ (Delta baryons (or Δ baryons, also called Delta resonances)) আবিষ্কৃত হলো। ১৯৫২ সালের গ্রীষ্মকালে তিনি ম্যানিয়াক কম্পিউটার ব্যবহার করে ফেজ শিফট গণনা করেছিলেন, যা এই বিষয়ের ওপর প্রথম ধরনের কাজ। কিন্তু একাজের চূড়ান্তরূপ তিনি দেখে যেতে পারেননি। ১৯৫৪ সালের ২৯ নভেম্বর ৫৩ বছর বয়সে হঠাৎ তার মৃত্যু হয়।

ফার্মির চরিত্রের বৈশিষ্ট্য ছিল তার অতুলনীয় সারল্য, তার ব্যক্তিত্বের সারল্য এবং পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গির সারল্য। জটিল সমস্যাকে ভাগ করে নিয়ে সমাধান বের করায় ফার্মির তুলনা ছিল না। সবসময়েই তিনি নতুন কাজ হাতে নিয়েছেন এবং যা হাতে নিয়েছেন তাতেই তিনি সার্থক হয়েছেন। ফার্মির মতো সব্যসাচী আর বোধহয় সৃষ্টি হবে না।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন