সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

ম্যাক্স বর্ন এর জীবনী – Max born - Life and Works

ম্যাক্স বর্ন এর জীবনী – Max born - Life and Works - Born approximation
ম্যাক্স বর্ন এর জীবনী – Max born - Life and Works - Born approximation

ম্যাক্স বর্ন এর জীবনী Max born - Life and Works

ম্যাক্স বর্ন ১৯২৬ সালে যখন কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সম্ভাবনাভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রস্তাব করেন, তখন তার বয়স চুয়াল্লিশ। পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি ইতোমধ্যেই বিখ্যাত হয়েছেন। প্রায় একশটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ তখনও করা হয়নি। সুতরাং অসাধারণ আবিষ্কার শুধু তরুণের পক্ষেই সম্ভব, এটা বোধহয় ঠিক নয়, যা প্রয়োজন তা হলো উপযুক্ত পরিবেশ। গত শতাব্দীর শেষে জার্মানিতে সেই পরিবেশ ছিল। ১৮৮২ সালে ম্যাক্স বর্নের জন্ম। এবং তিনি ছাত্র ছিলেন ব্রেসলাউ, হাউডেলবার্গ এবং জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের। গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করার পর সেখানেই তিনি অধ্যাপনা শুরু করেন এবং পরে ফ্রাংকফুর্ট এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হয়েছিলেন। ১৯৩৩ সালে হিটলার তাঁকে পদচ্যুত করে এবং উদ্বাস্তু হিসেবে ইংল্যান্ডে এসে তিনি প্রথমে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হন। ১৯৩৬ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি টায়েট অধ্যাপক হন এবং এখানেই তিনি ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ১৯৩৯ সালে তিনি এফ, আর, এস. হন এবং ১৯৫৪ সালে কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় তাঁর অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কারের বিভূষিত হন।

প্রথম মহাযুদ্ধের সময়ে ম্যাক্স বর্ন (Max Bornকেলাস পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে কাজ শুরু করেন। সময়েই তিনি ভন কারমানের (Theodore von Kármán) সঙ্গে ল্যাটিস ডাইনামিক্সের (Lattice Dynamics) ওপর তাঁর বিখ্যাত বইটি রচনা করেন। ম্যাক্স বর্ন আইনস্টাইনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং আপেক্ষিক তত্ত্বের উপর একটি বই লেখেন।

১৯০৯ সালে সাতাশ বছর বয়স্ক ম্যাক্স বর্ন পদার্থবিজ্ঞানের অগ্রগতি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সজাগ ছিলেন। তিনি জে. জে. থমসনের ইলেকট্রন আবিষ্কারকে বলেছিলেন, পিয়ানোর জন্য প্রোজ্জ্বল পরমাণুর মহান সিমফনির এটা একটা অংশ। তুলনাটি উল্লেখযোগ্য। কেননা, পরমাণু-বিজ্ঞানের সিমফনি সৃষ্টিতে ইলেকট্রন আবিষ্কার বিশাল ভূমিকা রেখেছে।

বিশের দশকে পদার্থবিজ্ঞানীদের এক নতুন প্রজন্ম চারটি কেন্দ্রে গড়ে উঠেছিল, কোপেনহেগেনে নীলস্ বোরের, গটিনজেনে (গটিনজেন ইউনিভার্সিটি) ম্যাক্স বর্নের, কেম্ব্রিজে রাদারফোর্ডের এবং মিউনিখে সমারফেল্ডের অধীনে - মোট চারটি কেন্দ্র। নীলস্ বোর, ম্যাক্স বর্ন এবং আরনল্ড সমারেফল্ড তিনজনই যথেষ্ট পরিণত বয়স্ক, যখন ১৯২৫ সালে হাইজেনবার্গ এবং ১৯২৬ সালে শ্রোডিঞ্জার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সৃষ্টি করেন। ম্যাক্স বর্ন লিখেছেন, “আমরা যে একটা নতুন কিছু পেয়েছি তার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল ১৯০০ সালে প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম প্রস্তাবনা থেকে। এর পরের পঁচিশ বছরে এই শুরু থেকে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সৃষ্টি হয়, যা পরমাণু জগতের বিশৃঙ্খলার মধ্যে শৃঙখলা এবং তাৎপর্য সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়।

সবই শুরু হয়েছিল ১৯২৫ সালে, যখন ভার্নার হাইজেনবার্গ একটি ছন্দিত স্পন্দকের শক্তিস্তর গণনার জন্য এক নতুন বীজগণিতের প্রস্তাব করেন। তিনি তার পাণ্ডুলিপিটি ম্যাক্স বর্নকে দেখালেন এবং ম্যাক্স বর্ন প্রস্তাবিত পদ্ধতির অভিনবত্ব দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলেন ম্যাক্স বর্ন লিখেছেন হাইসেনবার্গের পান্ডুলিপিটি পড়ে---“আমি তার প্রতীক গুণন নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করলাম এবং নিয়ে এতই মগ্ন হয়ে গেলাম যে, আমি সারাদিন চিন্তা করলাম আর রাতেও মোটেও ঘুমাতে পারলাম না---সকালে হঠাৎ আমি আলো দেখতে পেলাম, হাইসেনবার্গের প্রতীকী গুণন আসালে ম্যাট্রিক্স গুণন ছাড়া আর কিছুই নয়, যা ব্রেসলাউ- (Wrocław - Breslau) রোসানেসের (Jakob Rosanes) বক্তৃতা থেকে আমি ছাত্রাবস্থা থেকেই জানতাম। 

১৯২৫ সালের ১৯ জুলাই ম্যাক্স বন জার্মান ফিজিক্যাল সোসাইটির এক সভায় যোগদানের জন্য গটিনজেন থেকে হ্যানোভার যান। রেলস্টেশনে তিনি পাউলিকে (Wolfgang Ernst Pauli) তার আবিষ্কার এই ম্যাট্রিক্স গুণনের কথা বললেন এবং তাঁকে তার সঙ্গে ব্যাপারে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। কিন্তু পাউলি উত্তর দিলেন, “হ্যা, আমি জানি যে আপনি বিরক্তিকর এবং জটিল গণিত পছন্দ করেন। আপনি আপনার অর্থহীন গণিত দিয়ে হাইসেনবার্গের ভৌত ধারণাগুলোকে নষ্ট করে দেবেন।

কিন্তু পাউলি ভুল বলেছিলেন। শুধু শুধু ম্যাক্স বর্ন আনুষ্ঠানিক জ্ঞানের বন্যার মধ্যে পড়েন নি ---তার দরকার ছিল। হ্যানোভার থেকে ফিরে বর্ন তরুণ প্যাসকুয়াল জর্ডানকে (Ernst Pascual Jordan) বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাঁর দলে টানলেন এবং ১৯২৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরে দুজনে মিলে ম্যাট্রিক্স বলবিদ্যার প্রবর্তন করলেন।

এটাই বোধ হয় কোয়ান্টাম বলবিদ্যার (Quantum mechanics) সত্যিকারের শুরু। কেননা, ওই প্রবন্ধেই প্রথম জানা গিয়েছিল যে, হাইজেনবার্গ (Werner Karl Heisenberg) না বুঝে ম্যাট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে ফেলেছেন। আনুষ্ঠানিক গণিত ছাড়া হাইসেনবার্গের ভৌত ধারণা বোঝা সম্ভব ছিল না। 

১৯২৫ সালের ১৬ নভেম্বর বর্ন, হাইজেনবার্গ এবং জর্ডান একটি বিস্তৃত প্রবন্ধ লিখে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই প্রবন্ধে অনেক কিছু বলা হয়। যেমনআইনানুগ রূপান্তর (quantum conversion), বিক্ষোভতত্ত্ব, সমশক্তি বস্তুনিচয়ের কথা, কৌণিক ভরবেগের কারকের বিনিময়ী সম্পর্ক ইত্যাদি (Quantum Field theory)। বিজ্ঞানসাহিত্যে এই তিন পুরুষের কাজটি এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

কিন্তু এই নতুন অদ্ভুত গণিতের ভৌত তাৎপর্য কী?

প্রায় একই সময়ে শ্রোডিঞ্জার (Erwin Rudolf Josef Alexander Schrödinger) তার তরঙ্গ বলবিদ্যা প্রবর্তন করেছেন এবং প্রমাণ করেছেন যে, হাইসেনবার্গের ম্যাট্রিক্স পদ্ধতি (Matrix mechanics) এবং তার তরঙ্গ-সমীকরণ পদ্ধতি আসলে একই ব্যাপার, মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। তাহলে শ্রোডিঞ্জারের তরঙ্গ-অপেক্ষকেরই বা তাৎপর্য কী?

চিরায়ত বলবিদ্যার আওতায় প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না। অতীতের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ এল ১৯২৬ সালে ২৫ জুন ম্যাক্স বর্নের এক প্রবন্ধে। তিনি লিখলেন, “শ্রোডিঞ্জারের ভৌত ছবি সম্পূর্ণ বাতিল করে দেয়া দরকার, যা দিয়ে চিরায়ত অবিচ্ছিন্নতার তত্ত্বকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা হচ্ছে। শুধু গণিতটি রাখতে এবং তাকে নতুন ভৌত তাৎপর্য দিতে হবে। 

জুন মাসের এই প্রবন্ধে ম্যাক্স বর্ণ ইলেকট্রন রশ্মির বিক্ষেপন (seattering) আলোচনা করেছেন। বিক্ষেপণ তরঙ্গ-অপেক্ষকে অবশ্যই দুটো অংশ থাকবে। প্রথম অংশ হলো আপতিত রশ্মির অপেক্ষক। দ্বিতীয় অংশ হল বহির্মুখী গোলাকার তরঙ্গ। দ্বিতীয় অংশের একটি উৎপাদক থাকবে, যা ম্যাক্স বর্নের ভাষায় ইলেকট্রনের বিক্ষেপণের সম্ভাবনা নির্ধারণ করে।

অবশ্যই ম্যাক্স বর্ন এখানে ভুল বলেছিলেন। কেননা, বিক্ষেপণ উৎপাদকটি আসলে সম্ভাবনার বিস্তার, সম্ভাবনা নয়। বিক্ষেপণ উৎপাদকের বর্গ হলো সম্ভাবনা, যা ম্যাক্স বর্ন ওই প্রবন্ধের ফুটনোটেই উল্লেখ করেছিলেন। এভাবেই বৈপ্লবিক সম্ভাবনার ধারণা ফুটনোটের মধ্য দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানে প্রবেশ করেছিল।

একমাস পরে ম্যাক্স বর্ন তাঁর দ্বিতীয় প্রবন্ধে আর একটি নতুন কথা বললেন। জুন মাসের প্রবন্ধে তিনি রূপান্তরের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। ধারণা অবশ্য আইনস্টাইনের বিকিরণ রূপান্তরের প্রবন্ধ থেকেই সকলের কাছে পরিচিত (A B সহগ) কিন্তু জুলাই মাসে ম্যাক্স বর্ন অবস্থার সম্ভাবনার ধারণা সৃষ্টি করলেন। এই ধারণা অবশ্য সম্পূর্ণ নতুন। ম্যাক্স বর্ন সুন্দর করে লিখছেন, “বস্তুকণার গতি সম্ভাবনার সূত্র মেনে চলে কিন্তু সম্ভাবনা নিয়ে কার্য-কারণের সূত্রই মেনে চলে।

১৯২৬ সালের গ্রীষ্মকালে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার ভৌত নীতি ম্যাক্স বর্ণের কাছে দ্রুত পরিষ্কার হয়ে গেল। ১০ আগস্ট তিনি অক্সফোর্ডে বললেন, “চিরায়ত তত্ত্ব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রের অক্ষাংশ প্রবর্তন করে যা দিয়ে প্রতিটি প্রক্রিয়া নির্ধারিত হয়; কিন্তু এগুলি না জানা থাকায় এগুলির মানের ওপর গড় করে এদের অদৃশ্য করে দেয়া হয়। অন্যদিকে তত্ত্বে একই ফল পাওয়া যায় এগুলি মোটেই প্রবর্তন না করেও।

এখন প্রশ্ন করা যায় যে, সংঘর্ষের পর বস্তুনিচয়ের অবস্থার সম্ভাবনা কী? অবস্থাটি কী, সে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন। কেননা, তত্ত্ব সে সম্বন্ধে কিছুই বলে না। সুতরাং নতুন তত্ত্ব আগের চেয়ে অনেক বেশি বিনয়ী। এখানে স্বীকার করে নেয়া হয় যে, পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া যা দেখা হচ্ছে তাকেই বিক্ষুব্ধ করে। অতএব চিরায়ত বলবিদ্যার নিশ্চয়তা আর পাওয়া যাবে না। আসলে প্রকৃতির সূত্র ধরনের নিশ্চয়তার বিরুদ্ধে। হাইসেনবার্গের অনিশ্চয়তা সম্পর্কে কথাই বলা হয়। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রের জগতের প্রতিভাসের বর্ণনার জন্য আমরা যেসব ধারণা ব্যবহার করি সেগুলো আসলে চিরায়ত বলবিদ্যার ধারণা, কিন্তু এই জগতে চিরায়ত বলবিদ্যাই অচল বলে প্রমাণিত হয়েছে। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা আমাদের শেখায় কীভাবে পরস্পর বিরোধিতায় জড়িত না হয়ে এইসব ধারণা ব্যবহার করতে পারে। তরঙ্গ এবং বস্তুকণার ধারণা পরস্পরবিরোধী, কিন্তু একটি সঠিক গাণিতিক তত্ত্বে এই দুই ধারণা সমন্বিত করা হয়েছে। নীলস বোর এটাকে বলতেনপরিপূরকতা’, কেননা দুটো ধারণাই প্রতিভাস বর্ণনার জন্য প্রয়োজন।

১৯৫৪ সালে ম্যাক্স বর্ন নোবেল পুরস্কারে বিভূষিত হন তাঁর মৌলিক গবেষণার জন্য। বিশেষ করে, তরঙ্গ-অপেক্ষকের তাঁর পরিসংখ্যানভিত্তিক ব্যাখ্যার জন্য। ম্যাক্স বর্ণ তার নোবেল বক্তৃতায় বলেন যে, তিনি তার ব্যাখ্যা আইনস্টাইনের ধারণা থেকেই পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রকৃতির পরিহাস এই যে, আইনস্টাইন মোটেই ম্যাক্স বর্নের ব্যাখ্যা স্বীকার করতেন না। ১৯২৬ সালের ডিসেম্বর আইনস্টাইন ম্যাক্স বর্নকে লেখেন, “তত্ত্ব অনেক কিছুই বলে কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে তা আমাদের পরম বৃদ্ধির রহস্যের কাছাকাছিও আনে না।

অন্তত আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, তিনি পাশা খেলেন না। সেদিন থেকে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার জ্ঞানতাত্ত্বিক ভিত্তি নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। আজও এই প্রশ্নের সর্বজনগ্রাহ্য সমাধান পাওয়া যায়নি। মাক্স বর্ন তিরিশের দশকে সি, ভি. রামনের আমন্ত্রণে ব্যাংগালোরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটে ছয় মাসের জন্যে এসেছিলেন। রামন তাকে অধ্যাপক নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রবল প্রতিরোধের জন্য তা সম্ভব হয়নি। এমনকি রামনকে ডিরেক্টরের পদ ছেড়ে দিতে হয় এবং তার বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল যে, তিনি ম্যাক্স বর্নকে অধ্যাপক করতে চেয়েছিলেন। পরে ম্যাক্স বর্ন এবং রামনের সঙ্গে ল্যাটিস ডাইনামিক্স নিয়ে বেশ মতান্তর হয়েছিল।

বৃদ্ধ বয়সে ম্যাক্স বন জার্মানিতে ফিরে যান, যে জন্য আইনস্টাইন দুঃখ পেয়েছিলেন এবং তার কাছে চিঠি লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে ম্যাক্স বর্ন মারা যান।

Tags: ম্যাক্স বর্ন এর জীবনী, Max born - Life and Works, Born approximation

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন