![]() |
পদার্থের রকমারি - Variety of substances |
পূর্বের পর্ব - কুড়েৱ বাদশা (নিউটনের গতি ও সরণের তিনটি সুত্র এবং পদার্থ )
পদার্থের রকমারি - Variety of substances
সব পদার্থ ই তো তার এক রকমের নয়। কোনোটাকে বলে ঘন (solid ), কোনোটাকে বলে তরল (liquid),
কোনোটার নাম আবার বায়বীয় ( gaseous )
ঘন পদার্থের নমুনা কী রকম? ইট - পাথর, লোহা-লক্কড়, হীরে-জহরত ইত্যাদি। কিন্তু এরা সবই যে ঘন পদার্থ তা বুঝবে কী করে? কেননা, ঘন পদার্থর দুটি লক্ষণ আছে। প্রথমত, সমস্ত ঘন পদার্থরই একটা না একটা নিজস্ব চেহারা আছে—বাইরে থেকে বলপ্রয়োগ না করলে সেই চেহারা বদলানো যায় না। যেমন ধরো, একটা টাকা। তার চেহারাটা গোল। তাকে ট্যাঁকেই রাখি আর পকেটেই রাখি আর কৌটোতেই রাখি—যেখানেই রাখি না কেন, গোলই থেকে যাবে। হাতুড়ি পিটে তার চেহারাটা চৌকো বা লম্বা বা অন্য কোনো রকম করা যায়। কিন্তু তার মানেই হলো, বাইরে থেকে বলপ্রয়োগ করা। তাই বাইরে থেকে বলপ্রয়োগ না করলে ঘন পদার্থের নিজস্ব চেহারাটা বদলানো যায় না। তা ছাড়াও, ঘন পদার্থর আর একটা লক্ষণ আছে। সেটা হলো তার নিজস্ব আয়তন। তার মানে, প্রত্যেক ঘন পদার্থই খানিকটা করে জায়গা জুড়ে থাকে। টাকাটা যেখানেই রাখো না কেন, তার জন্যে যতোখানি জায়গা লাগবার কথা ঠিক তততখানিই জায়গা লাগবে-বেশিও নয়, কমও নয়। কিংবা ধরো, আমার পড়ার টেবিলটা। তার আয়তন হলো লম্বায় আড়াই হাত, চওড়ায় দুহাত আর দুহাত উঁচু। টেবিলটাকে এ-ঘরেই রাখি আর ও-ঘরেই রাখি যেখানেই রাখি না কেন, তার এই আয়তন বরাবরই সমান থাকবে। তরল পদার্থর বেলায় কিন্তু শুধু এই দ্বিতীয় লক্ষণটাই আছে, প্রথম লক্ষণটা নেই। তার মানে, তরল পদার্থর নিজস্ব কোনো চেহারা (আকৃতি) নেই, আছে শুধু নিজস্ব আয়তন। কেননা, তরল পদার্থকে যে পাত্রেই রাখো না কেন সেই পাত্রর যে-রকম চেহারা (আকৃতি) তরল পদার্থর চেহারাও সেই রকমের হয়ে যায়। যেমন ধরো, এক পোয়া দুধকে গেলাসের ভেতর রাখলে তার চেহারাটা ঠিক গেলাসের গড়নের মতোই, বোতলে রাখলে বোতলের মতোই, আবার থালায় ঢেলে দিয়ে থালার মতোই চ্যাপটা। তার মানেই তো, চেহারা বলতে তার নিজের কিছু নেই। চেহারা না থাকলেও কিন্তু তরল জিনিসগুলোর একটা করে নিজস্ব আয়তন থাকে। যেমন ধরো, এক পোয়া দুধকে তুমি গ্লাসেই রাখো আর বোতলেই রাখো তার পক্ষে যতোখানি জায়গা জুড়ে থাকবার কথা সে ততোখানি জায়গাই জুড়ে থাকে। তাই, আধ সের দুধকে এক পোয়া মাপের বোতলে পোরা যায় না, আবার এক-সেরী বোতলে ঢাললে বোতলটার আধখানা খালি থাকে।
কিন্তু বায়বীয় পদার্থরা একেবারেই যেন নিঃসম্বল। তাদের আছে নিজস্ব চেহারা, না নিজস্ব আয়তন। যেমন ধরো, খানিকটা অক্সিজেন গ্যাস। তরল পদার্থের মতোই তাকে যে-পাত্রর মধ্যে রাখবে সেই পাত্র অনুসারেই তার
চেহারা হয়ে যাবে : চৌকো বাক্সর মধ্যে রাখলে চৌকো, গোল বেলুনের মধ্যে রাখলে গোল, লম্বা নলের মধ্যে পুরে দিলে লম্বাই। শুধু তাই নয়, এই গ্যাসকে যে-কোনো আয়তনের পাত্রে রাখা যাক না কেন, গ্যাসটার আয়তন সেই পাত্রর আয়তন অনুসারে বদলে যাবে : একটা ছোটো বোতলের মধ্যে অক্সিজেন গ্যাস ভরে দাও, দেখবে গ্যাসটা পুরো বোতল জুড়ে রয়েছে ; তারপর বোতলের মুখ খুলে ওই গ্যাসকেই একটা মস্ত বড়ো জালার মধ্যে ছেড়ে দাও, দেখবে গ্যাসটা সেই জালাকেও পুরো জুড়ে রয়েছে।
পরের পর্ব - অণুর কথা - Discussion of molecules
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন